“মা” শব্দটি এক অনন্ত ভালোবাসা, আত্মত্যাগ ও নির্ভরতার প্রতীক। তবে মাকে কেবলমাত্র মাতৃত্বের সীমায় আবদ্ধ না রেখে, একজন পূর্ণাঙ্গ ব্যক্তি হিসেবে তার অবদান ও স্বতন্ত্র সত্তাকে সমাজে মর্যাদা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান, খ্যাতিমান কবি, সমাজবিজ্ঞানী ও শিকড়সন্ধানী গবেষক অধ্যাপক ড. মু. নজরুল ইসলাম তামিজী।
গত ১১ মে ২০২৫, রাজধানীর টিকাটুলিস্থ আর কে মিশন রোডে অবস্থিত ভুইয়া ও ব্রিটিশ ইন্টারন্যাশনাল কিডস স্কুল (বিকস) আয়োজিত মা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, চিত্রাঙ্কন ও ছড়া প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিকস-এর প্রিন্সিপাল ডা. মো. সিরাজুল আলম ভুইয়া।
অধ্যাপক ড. তামিজী বলেন,
> “মাকে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানাতে কোনো নির্দিষ্ট দিনের প্রয়োজন হয় না। প্রতিটি দিনই মা দিবস হওয়া উচিত। প্রতিটি সন্তানের হৃদয়ে মায়ের জন্য ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা ও সম্মান প্রতিদিনই থাকতে হবে। মা মানেই সন্তানদের জন্য নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ও নিরাপদ আশ্রয়। সামর্থ্যের শেষটুকু দিয়ে হলেও একজন মা সন্তানের মুখে হাসি দেখতে চান। যিনি মা হারিয়েছেন, তিনি যেন নিজের একটি জীবন্ত অংশ হারিয়ে ফেলেছেন।”
তিনি আরও বলেন,
> “মা দিবস কেবল আবেগের জায়গা নয়, বরং মায়ের প্রতি দায়িত্ব ও সম্মান স্মরণ করিয়ে দেয়। মাকে কেবল ‘মা’ বলেই সীমিত না রেখে তার চিন্তা, স্বপ্ন ও ব্যক্তিত্বকে গুরুত্ব দিয়ে তাকে স্বতন্ত্র মানুষ হিসেবে দেখতে হবে।”
অনুষ্ঠানে ঢাকা শহরের প্রায় ১০টি স্কুলের শতাধিক শিক্ষার্থী, তাদের মা ও শিক্ষকগণ অংশগ্রহণ করেন।
আয়োজনে শিক্ষার্থীরা তাদের মায়েদের প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে আবেগঘন পরিবেশে কেক কাটে। ছোটদের হাতে আঁকা ছবিতে ফুটে ওঠে মায়ের মুখচ্ছবি, মমতা ও ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি।
এছাড়া ছড়া পাঠ, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিজয়ীদের হাতে এবং রত্নাগর্ভা মায়েদের হাতে পুরস্কার ও সম্মাননা তুলে দেন অধ্যাপক ড. তামিজী নিজে।
সভাপতির বক্তব্যে বিকস প্রিন্সিপাল ডা. মো. সিরাজুল আলম ভুইয়া বলেন,
> “সবার আগে শিশু শিক্ষা। একজন শিক্ষিত মা-ই পারে একটি শিক্ষিত সমাজ উপহার দিতে। সেই উপলব্ধি থেকেই বিকস স্কুল আগামী জুন থেকে ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত প্রি-প্লে থেকে নার্সারি শ্রেণির ভর্তি ফিতে ৫০% ছাড় ঘোষণা করছে।”
তিনি আরও বলেন,
> “মা দিবস উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং দায়িত্ববোধ গড়ে তুলতে চাই। শিক্ষার গোড়াপত্তন হয় পরিবারের মাঝেই, আর তার প্রধান চালিকাশক্তি একজন মা।”
এই আয়োজন শুধু একটি দিবস পালন নয়, বরং সমাজে নারীর ভূমিকাকে নতুন আলোয় দেখার প্রয়াস—যেখানে মায়ের পরিচয় শুধুমাত্র মাতৃত্বে নয়, একজন সম্পূর্ণ, আত্মমর্যাদাশীল মানুষ হিসেবেও তার অবস্থান রয়েছে। অধ্যাপক ড. তামিজীর এমন দৃষ্টিভঙ্গি সমাজে একজন মায়ের স্বাধীন স্বত্বার মূল্যায়নের নতুন বার্তা পৌঁছে দেয়।